বেছে নিন পছন্দমত মাউস কিবোর্ড

আপনার বড় ভাই থাকে আমেরিকা আর আপনি বাংলাদেশ। ভাইয়ার সাথে চ্যাট করতে হবে। মাউস ব্যবহার করেই আপনাকে ম্যাসেঞ্জার খুলতে হবে। ম্যাসেঞ্জারে লিখতে ব্যবহার করতে হবে কিবোর্ড। আর ভাইয়ার সাথে কথা বলতে লাগবে একটা হেডফোন। ভাইয়া যেন আপনাকে দেখে সে জন্য লাগবে একটা ওয়েব ক্যামেরাও। কম্পিউটারের এই হার্ডওয়্যারগুলো আপনার কম্পিউটারের জন্য অপরিহার্য্য। আর গেম খেলার সময়তো আপনাকে অবশ্যই মাউস, কিবোর্ড ব্যবহার করতেই হবে। তাই কেমন হবে আপনার মাউস? কেমন হবে কিবোর্ড? আর কেমনই হবে এদের দাম? প্রশ্ন করুন নিজেকে কোনটি হলে আপনার জন্য ভাল হয় আর কোনটি আপনার বাজেটের ভিতরেই। এরপর বাছাই করে নিন আপনার পছন্দের কিবোর্ড ও মাউস। মাউস ও কিবোর্ড সর্ম্পকে তথ্যগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। আপনার জন্য কম্পিউটার বাজার ঘুরে লিখছেন খালেকুজ্জামান সম্রাট

কেমন হবে কিবোর্ড?
ডেস্কটপ কম্পিউটার অথবা লজিটেক জি-১৫ কিংবা জি-৯ লাস কম্পিউটারের সাথে মাউস ও কিবোর্ড পিএস-২ কিংবা ইউএসবি পোর্টের সাথে সংযুক্ত থাকবে। তারসহ এসব মাউস কিবোর্ড দেখেই আপনি অভ্যস্ত। তবে আপনার যদি একটি হোমথিয়েটার পিসি থাকে আর আপনি এটি দূরে রাখা সোফা হতে পরিচালনা করতে চান তবে তার ছাড়া মাউস কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারেন। যা টিভির রিমোটের মতো কাজ করবে। ওয়্যারলেস মাউস কিবোর্ডগুলো আপনি নির্দিষ্ট দূরত্বের ব্যবধানে পরিচালনা করতে পারবেন।

আপনি কম্পিউটারের বাজারে দু’ধরণের কিবোর্ড পাবেন। একদিকে গেমিং কিবোর্ড অন্যদিকে মিডিয়া সেন্টার কিবোর্ড। গেমাররা সাধারণত গেম খেলার উপযোগী একটি কিবোর্ড খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক। গেমিং কিবোর্ডগুলোতে অতিরিক্ত কিছু বাটন থাকে যেগুলো গেম খেলার সময় অতিরিক্ত সুবিধা দেয়। অপরদিকে মিডিয়া সেন্টার কিবোর্ডেও অতিরিক্ত কিছু বাটন থাকে অতিরিক্ত কিছু প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। গেমিং কিংবা মিডিয়া সেন্টার যে ধরণেরই কিবোর্ডই হোক না কেন এগুলো ওয়্যার বা ওয়্যারলেস এই দুধরণের হয়ে থাকে। ওয়্যারলেস কিবোর্ডগুলো শোবার রুমের অন্য প্রান্তে রাখা সোফা হতে আপনি কম্পিউটারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। অন্যদিকে পিএস-২ কিংবা ইউএসবি পোর্টের ওয়্যার মাউসগুলো আপনাকে সেই মনিটরের সামনেই বসিয়ে রাখবে। আপনার জন্য সুসংবাদ হচ্ছে এখনকার বাজারে যেসকল ওয়্যারলেস কিবোর্ড গুলো পাওয়া যাচ্ছে এগুলো ব্যবহারে কোন অংশেই ওয়্যারড কিবোর্ড হতে কম নয়। এইতো কিছুদিন আগেই ওয়্যারলেস কিবোর্ডগুলো ওয়্যারড কিবোর্ডের মতো শক্তিশালী ছিলনা। যা গেম খেলার সময় ভালই টের পাওয়া যেত।

কাজ করার সময় কিবোর্ডটিকে লেখার সুবিধার্থে একটু টেনে কাছে আনতে গিয়েই কিবোর্ডের লাইনটা আলগা হয়ে যায়। আর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে লাইনটা কানেক্ট করে কম্পিউটারটিকে আবার চালু করতে হয়, তাই না? দারুণ ব্যস্ততার সময় নিদারুণ বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায় পুরো কম্পিউটারের তুলনায় প্রায় বিনামূল্যে কেনা কিবোর্ডটি। পিএস-২/ ইউএসবি পোর্টের কিবোর্ডের এমন কাটা ঘা নুনের ছিটা হতে বাচতেই আপনি ওয়্যারলেস মাউস ব্যবহার শুরু করতে পারেন। বাজারে এখন সবচেয়ে বহুল বিক্রিত ওয়্যারলেস মাউস ও কিবোর্ড হচ্ছে এফোর টেকের পাওয়ার সেভার আর৭। এর দাম পড়বে ২১০০-২২০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া পিএস ২/ ইউএসবি পোর্টের নরমাল কিবোর্ডের দাম পড়বে ১৮০-২৫০ টাকা। আর পিএস ২/ ইউএসবি পোর্টের মাল্টিমিডিয়া কিবোর্ডের দাম পড়বে ৩৫০-৫৩০ টাকা।

কেমন হবে মাউস?
খুব বেশি দিনের ব্যবধান নয় একটু পিছন ফিরে তাকালেই দেখতে পাবো পুরনো মডেলের মাউসগুলোর ভেতর একটা বল থাকতো যার নড়াচড়ার উপর মাউসপয়েন্টারের নড়াচড়া নির্ভর করতো। কিন্তু প্রায়ই বলটি ময়লা হয়ে গিয়ে কাজে সমস্যা করতো। এমন সমস্যা হতে মুক্তি পেতেই অপটিক্যাল মাউস বাজারে আসে। যেগুলোতে একটি ছোট ক্যামেরা এবং লেড লাইট ব্যবহার করা হতো মাউসিং সারফেসের ছবি তোলার জন্য। কিন্তু এতেও একটা সমস্যা ছিল। অপটিক্যাল মাউস সকল ধরণের সারফেসের ছবি তুলতে পারতো না। এমন সমস্যা হতে পরিত্রাণ দিতেই বাজারে আসে লেজার মাউস। লেজার সকল সারফেসের ছবি তুলতে সক্ষম। যদিও বল মাউসকে বাদ দেয়া গেছে তাই বলে আমরা কিন্তু অপটিক্যাল মাউসকে বাদ দিতে পারছি না। কারণ অপটিক্যাল মাউস দিনের পর দিন ব্যবহার ও গ্রাফিক্সের কাজ করার জন্য উত্তম। গেমারদের জন্য সবচেয়ে ভাল হচ্ছে লেজার মাউস। লেজার মাউসই আপনাকে সেরা আউটপুট দেবে।

গেমিং কিবোর্ড ও নরমাল কিবোর্ডের মধ্যে কিছু বাটন ব্যবহার ছাড়া যদিও খুব বেশি পার্থক্য নাই। তবে গেমিং মাউস আর নরমাল মাউসের মধ্যে অনেক বড়রকমের ব্যবধান আছে। গেমিং মাউসে এমন কিছু ফিচার আছে যেগুলো প্রথাগত মাউসে কোন উপায়েই করা সম্ভব নয়। গেমিং মাউসে মাইক্রোসফট কাস্টম ওয়েন্ট কন্ট্রোল, অর-দ্যা-ফ্লাই ডিপিআই টিউইকং, স্কাই হাই সেনসিটিভি, বিভিন্ন প্রোগ্রাম্যাবল বাটন ছাড়াও লোডেড সফটওয়্যার প্যাকেজ আছে। যেগুলো গেম খেলা ও উইন্ডোজে আপনাকে সর্বত্র কাজ আদায় করে নিতে সাহায্য করবে। গেমারদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মাউসের সেন্সিভিটি। মাউসের সেন্সিভিটি যতো বেশি সেই মাউস ততো ভালো। একটি স্ট্যান্ডার্ড মাউসে ৮০০ ডিপিআই থাকে। সেক্ষেত্রে গেমিং মাউসগুলোতে ২০০০ ডিপিআই থাকে। এছাড়া শীঘ্রই ৪০০০ ডিপিআইয়ের মাউস বাজারে আসছে। আপনি যদি গেমার হন এবং গেমিংয়ে পুরো মাত্রায় আনন্দ পেতে চান তবে আপনার জন্য গেমিং মাউসের বিকল্প নেই। তবে আপনি সিরিয়াস গেমার না হলে শুধু শুধু গেমিং মাউসের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার কোন মানে নাই। বাজারে এখন তিন ধরণের মাউসই পাওয়া যায়। বল মাউসের দাম ১১০-১৭০ টাকার মধ্যেই। অপটিক্যাল মাউস ১৮০-২৩০ টাকা। আর লেজার মাউসগুলো পাবেন ২৩০-৩০০ টাকার ভিতরেই।

আপনার প্রয়োজনেই মাউস কিবোর্ড ছাড়াও আরও কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে হবে। জেনে নিন পণ্যগুলোর দাম। মাইক্রোফোন পাবেন ১৩০-২৫০ টাকার মধ্যেই। আপনি বাজারে বিভিন্ন স্টাইল ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হেড ফোন পাবেন। এগুলোর দাম ২৩০-৭৫০ টাকা পর্যন্ত। কসনিক হেড ফোন ও মাইক্রোফোনই বাজারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া একটি ওয়েব ক্যামেরা পাবেন ১৬০০-২০০০ টাকার মধ্যে। ওয়েব ক্যামেরার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত হচ্ছে এফোর টেক। আপনি যাই কিনুন না কেন তার জন্য আপনাকে অবশ্যই বাজার ঘুরেই কিনতে হবে। ঘরে বসেই ধারণা করে নিন বাজেট আর বাজার যাচাই করে কিনুন আপনার পছন্দের পণ্য।

Copyright © 2009 - www.techzoom7.tk - is proudly powered by Blogger
Smashing Magazine - Design Disease - Blog and Web - Dilectio Blogger Template